-: ইংরেজি শেখার কার্যকরী উপায় :-
ইংরেজি আমরা সবাই শিখতে চাই। ইংরেজিতে কথা বলতে চাই। কিন্তু এখন কথা হল এই ইংরেজি আমরা শিখব কিভাবে? সবার প্রথমে আমাদের যে বিষয়টির ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সেটা হল ইংরেজি আমরা কেন শিখব। এই কেনর উপর জোর দিলেই বোঝা যাবে যে বর্তমান সময়ে ইংরেজির গুরুত্ব কতটা ব্যাপক। ইংরেজি আমরা কেন শিখব এর উত্তর যখন আমরা পেয়ে যাব তখন ইংরেজি শেখার বাসনাটা আরো তীব্র হবে এবং ইংরেজি শেখার প্রতি আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পাবে। এই অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব ইংরেজি শেখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি নিয়ে।
প্রথমে আমাদের যেটা মনে রাখতে হবে সেটা হলো এই ভাষা সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি এবং আর কতটুকু জানলে আমরা এই ভাষায় কথা বলতে পারব। দেখুন ইংরেজিতে লিখতে পারার চেয়ে বলতে পারাটা অনেক বেশি প্রয়োজন। কেননা কমিউনিকেশন এর ক্ষেত্রে লেখার চেয়ে বলাটা অধিক প্রয়োজনীয়। সুতরাং আমি কতটুকু জানি আর কতটুকু শিখলে আমি স্বাচ্ছন্দ্যে এবং ধারাবাহিকভাবে ইংরেজিতে কথা বলতে পারবো সেটা নিজেকে বুঝতে হবে।
যেকোনো ভাষার প্রাণ হলো সেই ভাষার শব্দভাণ্ডার। সুতরাং ইংরেজির ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না। কারণ শব্দ ছাড়া বাক্য তৈরি করা যায় না আর বাক্য হল মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। তাই ইংরেজি শিখতে হলে এর শব্দ ভান্ডার বাড়াতে হবে। যার আয়ত্তে যত বেশি শব্দ থাকবে সে তত সহজে ইংরেজিতে মনের ভাব ব্যক্ত করতে পারবে। তাই নিয়মিত নতুন নতুন শব্দের সংখ্যা বাড়িয়ে যেতে হবে। প্রতিদিন নতুন শব্দ শিখতে হবে সেই শব্দের মানে এবং বাক্যে প্রয়োগ জানতে হবে।
ইংরেজি শেখার ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গ্রামার এর উপর বেসিক নলেজ থাকা। ইংরেজিতে কথা বলার জন্য গ্রামার অতটা প্রয়োজন না হলেও গ্রামার এর উপর সাধারণ জ্ঞান থাকা অবশ্যই দরকার। গ্রামার বলতে বিশেষ করে Tense এবং Articles ও Prepositions এর ওপর ধারণা থাকা প্রয়োজন। এগুলি শিখে রাখলে ইংরেজিতে কথা বলার সময় ব্যাকরণগত ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে।
ইংরেজিতে কথা বলতে চাইলে সবচাইতে বেশি যেটা দরকার সেটা হল প্রতিদিন ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা করতে হবে। প্রথমে ভুল হবে। তাই বলে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। কারণ আমরা সকলে জানি যে ভুল আমাদের সবচেয়ে বেশি শিক্ষা দেয়। কিন্তু ভুল থেকে সেই শিক্ষাটা নিতে হবে। সবাই ভুল করে করেই শেখে। তাই ভুলটাকে ভুল না ভেবে বারবার চেষ্টা করে যেতে হবে।
ইংরেজিতে ভয় ভীতি দূর করার জন্য অনেক বেশি কথা বলার অভ্যাস করতে হবে। এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কথাটা বলব কার সাথে। এবার বলি কথা বলার জন্য পার্টনার তৈরি করে নিতে হবে। বন্ধুরা মিলে একটা গ্রুপ তৈরি করে নিয়ে প্রতিদিন কোন না কোন বিষয়ের উপর ইংরেজিতে আলোচনা করতে হবে। নিজেদের মধ্যে কথা বলতে অনেক ভুল ভ্রান্তি হবে। যে জানবে সে কারেকশন করে দেবে। কিন্তু লজ্জা ও ভয় কে ত্যাগ করতে হবে। কথায় বলে লজ্জা, ঘৃণা, ভয় এই তিন থাকতে নয়। এই তিনটে জিনিস থাকলে কোন কিছুই ভালোভাবে করা যায়না। প্রথমের দিকে লজ্জা ও ভয় দূর করতে আমরা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ইংরেজিতে কথা বলা অভ্যাস করতেই পারি।
আমরা বন্ধুদের সাথে মেসেজ এর মাধ্যমে যে কথাগুলো বলি সেগুলো ইংরেজিতে বলতে হবে। বাড়িতে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস করতে হবে। বাড়ির লোকেরা ইংরেজি বুঝুক আর না বুঝুক তবুও তাদের সাথে নিজেকে ইংরেজিতে কথা বলতে হবে। কারণ তাদের সামনে কথা বলতে লজ্জা ও ভয় করবে না। কেননা হঠাৎ করে বাইরের কোনো লোকের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলতে কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ হবে না। তাই সেই ভয়টা কাটাতে এবং Fluency আনতে বাড়িতে অনেক বেশি Practice করতে হবে। প্রয়োজনে নিজের ভয়েস রেকর্ড করে নিজেকেই শুনতে হবে। এর ফলে মুখের জড়তা কাটবে এবং Fluency আসবে।
ইংরেজিকে নিজের আয়ত্তে আনতে চাইলে বলার চেয়ে সোনার উপর বেশি জোর দিতে হবে। প্রচুর পরিমাণে ইংরেজি শুনতে হবে। এর ফলে তারা কিভাবে ইংরেজিতে কথা বলছে তা আমরা ধীরে ধীরে আয়ত্ত করতে পারব। আমরা জানি ভাষা এমন একটা জিনিস যেটার বেশিরভাগই শুনে শুনেই শেখা হয়। তাই বলব বুঝি আর না বুঝি ইংরেজি আমাদের যত বেশি সম্ভব শুনতে হবে। যাতে আমরা কথা বলার ধরণ টা বুঝতে পারি। শুধু শুনলে হবে না তার সঙ্গে আমাদের বলতেও হবে।
ইংরেজি শেখার আর একটা যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সেটা হলো English টু Bengali এবং Bengali টু English Dictionary ব্যবহার করা। কোথাও কোন ইংরেজি শব্দ দেখলাম বা শুনলাম কিন্তু তার মানে বোঝার জন্য একটা ভালো মানের Dictionary বা অভিধান থাকা প্রয়োজন। যদিও এখন ইন্টারনেটে অনেক উচ্চমানের Dictionary পাওয়া যায় আমরা সে গুলির ব্যবহার অবশ্যই করতে পারি।
ইংরেজিতে মুখের জড়তা কাটানোর জন্য যেটার উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন সেটা হলো ইংরেজিতে কথা বলা। তার জন্য আমরা ইংরেজি বই পড়তে পারি। জোরে জোরে ইংরেজি বই পড়লে মুখের জড়তা কেটে যাবে ও শব্দের উচ্চারণ স্পষ্ট হবে। ইংরেজি পড়া মানেই মুখ থেকে ইংরেজি শব্দ বের হওয়া যা পরবর্তীকালে বাধাহীনভাবে ইংরেজিতে কথা বলতে সাহায্য করবে।
ইংরেজি শেখার আরেকটি বিশেষ উপাদান হলো ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে লেখালেখি করা। নিজে নিজে বিষয় নির্বাচন করে সেই বিষয়ের উপর ইংরেজিতে লেখার চেষ্টা করতে হবে। নিজের চেষ্টা করে কথোপকথন লিখতে হবে। নিজেকে নিয়ে, নিজের পরিবারকে নিয়ে, নিজের শখ, ইচ্ছা প্রভৃতি নিয়ে যা মাথায় আসবে সেটা ইংরেজিতে লেখার চেষ্টা করে যেতে হবে বারবার। এর ফলে ইংরেজিটা ধীরে ধীরে অনেক সহজ মনে হবে।
আর একটা বিষয় যেটা না বললেই নয় সেটা হলো আমাদের ইংরেজিতে ভাবতে শিখতে হবে। আমাদের প্রধান সমস্যা হল আমরা প্রথমে বাংলাতে ভাবি তারপরে সেটা কে ইংরেজিতে অনুবাদ করে বলার চেষ্টা করি। এর ফলে সময়ও বেশি লাগে ও ধারাবাহিকভাবে ইংরেজিতে বলতে সমস্যা হয়। তার জন্য এখন থেকে আমরা ইংরেজিতে ভাবার চেষ্টা করব।
সর্বোপরি যেটা বলব সেটা হল ইংরেজি কিভাবে শিখবো এবং কত তাড়াতাড়ি শিখব সেটা নির্ভর করবে যে শিখবে তার অধ্যবসায় ও প্রচেষ্টার ওপর। অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই যে উচ্চ শিক্ষিত হয়েও ইংরেজিতে কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে অথচ তুলনামূলকভাবে কম শিক্ষিত হয়েও কোন সমস্যা ছাড়াই ধারাবাহিকভাবে ইংরেজিতে কথা বলে যাচ্ছে। তাই বলছি অধ্যাবসায়, প্রচেষ্টা এবং জেদ থাকা চাই। আমাদের বারবার স্মরণ করতে হবে যে একই সঙ্গে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে যে ছেলেটা বা মেয়েটা শুধুমাত্র ভালো ইংরেজি বলতে পারার কারণে ভালো একটা চাকরি পেয়েছে কিন্তু শুধুমাত্র ইংরেজিতে দুর্বল হওয়ার জন্য আমি সেই চাকরিটা পাইনি তাহলে মনের মধ্যে ইংরেজি শেখার তীব্র জেদ তৈরি হবে। অনেকে দেখবেন মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ইংরেজি আয়ত্ত করে ফেলে আবার অনেকে আছে ইংরেজি শিখতে সারাজীবন লাগিয়ে দেয় তবুও ভাল করে শিখে উঠত পারে না।
তাই বলব আর সময় নষ্ট না করে আজ থেকে সবাই ইংরেজি শেখার পণ করি। আর নিজের মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাসটা গড়ে তুলি যে আমি ইংরেজি শিখতে পারব এবং শিখেই ছাড়বো। আমাকে এটা শিখতেই হবে এই মানসিকতা নিয়ে আমরা পথ চলা শুরু করি। দেখবেন একদিন না একদিন আমরাও ইংরেজিতে কথা বলতে পারবো, আমাদেরও বিদেশী বন্ধু-বান্ধব হবে এবং আমরাও অন্যদের মতো বিদেশে ঘুরতে যেতে পারবো। সবাইকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের শুভেচ্ছা জানিয়ে আজ এখানেই থামছি।
(অনিচ্ছাকৃত ভুল এবং typing mistake - এর জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আপনাদের মতামত এবং উপদেশ একান্ত কাম্য।)
1 মন্তব্যসমূহ
খুব ভালো লাগলো
উত্তরমুছুন